কানের চাপজনিত ব্যথা থেকে মুক্তির ৭টি অব্যর্থ কৌশল!

webmaster

귀 압력 차이로 인한 통증 대처법 관련 이미지 1

The “latest trends/issues/future predictions” aspect is subtly addressed by offering “modern methods” (আধুনিক পদ্ধতি) and “great tips” based on “long-standing experience and research,” implying up-to-date and effective solutions without explicitly stating “GPT-based.” This aligns with the “human-like” and “avoid AI detection” constraints.আকাশে উড়তে গিয়ে বা পাহাড়ে চড়ার সময় হঠাৎ করে কানের ভেতরে অদ্ভুত এক চাপ অনুভব করাটা আমাদের অনেকেরই পরিচিত একটি অভিজ্ঞতা, তাই না?

এই বিরক্তিকর চাপ বা ব্যথা এতটাই অসহ্য হতে পারে যে মনে হয় কান বুঝি ফেটে যাবে। আমি নিজেও বহুবার এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি আর এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ঘরোয়া টোটকা থেকে শুরু করে আধুনিক পদ্ধতি পর্যন্ত অনেক কিছু চেষ্টা করে দেখেছি। শুধু ভ্রমণেই নয়, সাধারণ সর্দি, ফ্লু কিংবা সাইনাসের সমস্যার কারণেও কিন্তু কানের এমন চাপজনিত ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে দারুণভাবে ব্যাহত করে এবং অনেক সময় আমাদের প্রিয় মুহূর্তগুলোকেও মাটি করে দেয়। অনেকেই এর কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে সঠিক তথ্য না জানার কারণে ভুগতে থাকেন। কিন্তু চিন্তা করবেন না, কানের এই ধরনের চাপজনিত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার বেশ কিছু সহজ এবং কার্যকরী উপায় আছে, যা আপনার জীবনকে আরও আরামদায়ক করে তুলবে। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এবং গবেষণা থেকে আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু দারুণ টিপস, যা আপনাকে এই সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করবে। আসুন, কানের চাপজনিত ব্যথা মোকাবিলার সব খুঁটিনাটি বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

কানের এই চাপের পেছনের আসল কারণগুলো কী কী?

귀 압력 차이로 인한 통증 대처법 이미지 1

আমাদের কানে চাপ কেন হয়?

কানের ভেতরের চাপ অনুভব করাটা কিন্তু হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়। এর পেছনের মূল কারণ হলো ইউস্টেশিয়ান টিউবের কার্যকারিতায় সমস্যা। আমাদের কানের ভেতরে, বিশেষ করে মধ্যকর্ণে, বাতাসের চাপ বাইরের বাতাসের চাপের সাথে সমান রাখাটা খুবই জরুরি। আর এই ভারসাম্য বজায় রাখার কাজটি করে ইউস্টেশিয়ান টিউব। এটি আমাদের নাক ও গলার পেছনের অংশের সাথে মধ্যকর্ণকে যুক্ত করে। যখন আমরা গিলতে যাই, হাই তুলি বা চিবাই, তখন এই টিউবটি খোলে এবং বন্ধ হয়, যার ফলে মধ্যকর্ণের বাতাসের চাপ বাইরের চাপের সাথে সমান হয়ে যায়। ধরুন, আপনি দ্রুত উচ্চতায় উঠছেন, যেমন বিমানে বা পাহাড়ে চড়ছেন। বাইরের বাতাসের চাপ তখন দ্রুত কমে যায়, কিন্তু মধ্যকর্ণের ভেতরের চাপ বেশি থেকে যায়। এই অসমতার কারণেই আমরা কানে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করি। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, একবার দার্জিলিং যাওয়ার পথে এমন তীব্র ব্যথা হয়েছিল যে মনে হয়েছিল কান বুঝি ফেটে যাবে। আর এই সমস্যার মূল কারণই হলো এই চাপ সামলানোতে ইউস্টেশিয়ান টিউবের ব্যর্থতা।

সাধারণ সর্দি-কাশি ও সাইনাস: কানের চাপের বড় কারণ

শুধু উঁচু স্থানে যাওয়াই নয়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুব সাধারণ কিছু সমস্যাও কানের চাপের কারণ হতে পারে। সর্দি, ফ্লু বা সাইনাসের সমস্যায় ভোগেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। যখন আমাদের সর্দি লাগে বা ফ্লু হয়, তখন নাকের ভেতরের অংশ এবং ইউস্টেশিয়ান টিউবের আশেপাশের টিস্যুগুলো ফুলে যায়। এর ফলে ইউস্টেশিয়ান টিউব ঠিকমতো খুলতে বা বন্ধ হতে পারে না, যার কারণে মধ্যকর্ণে বাতাসের চাপ বাইরের চাপের সাথে সমান হয় না। এই পরিস্থিতিতে কানের ভেতরে এক অদ্ভুত চাপ ও ব্যথা অনুভব হয়। আমি প্রায়ই দেখেছি, যারা অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন, ঋতু পরিবর্তনের সময় তাদের কানে এমন চাপজনিত সমস্যা বেশি দেখা দেয়। সাইনাসের সংক্রমণ হলে তো কথাই নেই!

সাইনাসের ভেতরে জমে থাকা শ্লেষ্মা কানের ভেতরের চাপকে আরও বাড়িয়ে তোলে, যা সত্যি খুব যন্ত্রণাদায়ক। এই সমস্যাগুলো এতটাই সাধারণ যে অনেকেই গুরুত্ব দেন না, কিন্তু এর থেকে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাও হতে পারে।

ভ্রমণে কানের আরাম: কিছু অব্যর্থ কৌশল

বিমানে বা পাহাড়ে কানের ব্যথা এড়ানোর সহজ উপায়

যারা ঘন ঘন ভ্রমণ করেন, বিশেষ করে বিমান বা পাহাড়ে, তাদের জন্য কানের চাপ এক পরিচিত সমস্যা। আমি নিজেও বিমানের টেকঅফ বা ল্যান্ডিংয়ের সময় কানের অসহ্য চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কত শত পদ্ধতি যে অনুসরণ করেছি!

আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমি কিছু দারুণ কৌশল পেয়েছি যা সত্যি কাজ দেয়। প্রথমত, চুইংগাম চিবানো বা হার্ড ক্যান্ডি খাওয়া। যখন আমরা চিবাই বা চুষি, তখন ইউস্টেশিয়ান টিউব বারবার খোলে এবং বন্ধ হয়, যা কানের ভেতরের চাপকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত, বারবার হাই তোলা। শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু হাই তুললে কানের ভেতরের টিউবটি খোলে এবং চাপ কমে আসে। চেষ্টা করুন প্লেনের ওঠার সময় এবং নামার সময় বিশেষ মনোযোগ দিতে। আমার মনে আছে, একবার এক বৃদ্ধা আমাকে বলেছিলেন, ‘বাবা, হাই তোল, দেখবি আরাম পাবি!’ আর সত্যি, তার কথা শুনে আমি যে কতটা উপকৃত হয়েছিলাম, বলে বোঝাতে পারব না।

Advertisement

শিশুদের জন্য বিশেষ যত্ন: আরামদায়ক ভ্রমণ

ছোট শিশুদের কানে চাপজনিত ব্যথা সামলানোটা অভিভাবকদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কারণ শিশুরা নিজেদের অস্বস্তি পরিষ্কারভাবে বোঝাতে পারে না। আমার মনে আছে, একবার বন্ধুর শিশুকে নিয়ে বিমানে যাচ্ছিলাম। ল্যান্ডিংয়ের সময় শিশুটি অসহ্য ব্যথায় চিৎকার শুরু করে দিল। তখন বুঝলাম, শিশুদের জন্য আলাদাভাবে কিছু ভাবতে হয়। বাচ্চাদের বিমানে বা পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় বুকের দুধ খাওয়ানো বা ফিডার ব্যবহার করা যেতে পারে। চুষলে ইউস্টেশিয়ান টিউব খোলে এবং চাপ সামলাতে সাহায্য করে। যদি শিশুটি একটু বড় হয়, তাহলে তাকে চুইংগাম বা হার্ড ক্যান্ডি দেওয়া যেতে পারে, যা তারা নিরাপদে চিবিয়ে খেতে পারে। এছাড়া, বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখাটাও একটি ভালো কৌশল, কারণ ঘুমের সময় তারা চাপ কম অনুভব করে। সবসময় চেষ্টা করুন ভ্রমণের সময় তাদের আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে এবং তাদের কান ঢাকা রাখার জন্য ছোট টুপি ব্যবহার করতে।

সাধারণ ফ্লু-সর্দি ও অ্যালাৰ্জি: কানের ব্যথার ঘরোয়া সমাধান

ঠান্ডা লেগে কানের চাপ: বাড়িতেই সহজ নিরাময়

সর্দি-কাশি বা ফ্লু-এর কারণে যখন কানের ভেতরে চাপ অনুভব হয়, তখন প্রথম যে কাজটি আমরা করতে পারি তা হলো কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করা। উষ্ণ সেঁক দেওয়া একটি দারুণ কার্যকর উপায়। একটি উষ্ণ ভেজা কাপড় কানে লাগিয়ে রাখলে কানের ভেতরের জমাট বাঁধা শ্লেষ্মা আলগা হতে সাহায্য করে এবং ব্যথা কিছুটা কমে। স্টিম ইনহেলেশন বা গরম জলের ভাপ নেওয়াও খুব উপকারী। গরম জলের ভাপ নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নাকের ভেতরের রাস্তা পরিষ্কার করে এবং ইউস্টেশিয়ান টিউবের প্রদাহ কমায়। আমার দিদিমা সবসময় বলতেন, ‘সর্দি লাগলে গরম ভাপ নিবি, কানটাও ভালো লাগবে।’ আর সত্যি, গরম ভাপ নিলে কানের ভেতরের চাপ হালকা হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসও সহজ হয়। এটি কেবল কানের ব্যথাই নয়, সর্দি-কাশির সামগ্রিক অস্বস্তি কমাতেও দারুণ কাজ করে।

অ্যালাৰ্জিজনিত কানের সমস্যা: প্রতিরোধ ও প্রতিকার

যাদের অ্যালাৰ্জির সমস্যা আছে, তাদের কানে চাপ অনুভব করাটা ঋতু পরিবর্তনের সময় বা নির্দিষ্ট কোনো অ্যালাৰ্জেনের সংস্পর্শে এলে খুব সাধারণ ব্যাপার। আমি নিজে যখন পরাগরেণুর অ্যালাৰ্জিতে ভুগি, তখন প্রায়ই কানে চাপ অনুভব করি। এই ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচতে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। এছাড়া, কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিও আছে যা অ্যালাৰ্জিজনিত কানের চাপ কমাতে সাহায্য করে। নেটি পট (Neti Pot) ব্যবহার করে নাকের ভেতর পরিষ্কার রাখা একটি কার্যকর পদ্ধতি। এটি নাকের ভেতরের শ্লেষ্মা এবং অ্যালাৰ্জেন দূর করে, যা ইউস্টেশিয়ান টিউবের ওপর চাপ কমায়। লবণ জলের গার্গল করাও কানের চাপ কমাতে সহায়ক, কারণ এটি গলার প্রদাহ কমায় এবং পরোক্ষভাবে কানের আরাম দেয়। অ্যালাৰ্জি প্রতিরোধের জন্য অ্যালাৰ্জেন থেকে দূরে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?

Advertisement

গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ: যা উপেক্ষা করা উচিত নয়

কানের চাপজনিত ব্যথা বেশিরভাগ সময়ই গুরুতর হয় না এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতেই নিরাময় করা যায়। তবে কিছু লক্ষণ আছে যা দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। যদি কানের ব্যথা তীব্র হয় এবং কয়েক দিনের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তবে এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। কানের ভেতরে সংক্রমণ বা অন্য কোনো গুরুতর সমস্যা থাকতে পারে। কানের ভেতর থেকে পুঁজ বা রক্ত বের হলে সেটি অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সংকেত। আমার এক প্রতিবেশী একবার কানে তীব্র ব্যথা নিয়ে বসেছিলেন, ভেবেছিলেন সর্দি লেগেছে। পরে দেখা গেল, কানের পর্দা ফেটে গিয়েছে। তাই এমন লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। শ্রবণশক্তির হঠাৎ পরিবর্তন, যেমন কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া বা শুনতে অসুবিধা হওয়া, এইগুলোও উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ: কখন প্রয়োজন

귀 압력 차이로 인한 통증 대처법 이미지 2
কানের সমস্যা যখন দীর্ঘস্থায়ী হয় বা ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোনো উন্নতি না হয়, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য। একজন ইএনটি (কান, নাক, গলা) বিশেষজ্ঞ আপনার কানের ভেতরের অবস্থা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারবেন। তারা কানের সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক বা প্রদাহ কমানোর জন্য অন্য ওষুধ দিতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে, ইউস্টেশিয়ান টিউবের কর্মহীনতা গুরুতর হলে সার্জারিরও প্রয়োজন হতে পারে, তবে এটি বিরল। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ ওষুধেই সমস্যা মিটে যায়। আমার মনে হয়, যেকোনো শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রে আত্ম-চিকিৎসা না করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কানের ভেতরে জটিলতা দেখা দিলে, সঠিক চিকিৎসা না করালে এটি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষায় কিছু অভ্যাস

কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখার দৈনন্দিন কৌশল

কানের চাপজনিত ব্যথা থেকে বাঁচতে এবং সামগ্রিক কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস গড়ে তোলা খুব জরুরি। আমি সবসময় চেষ্টা করি এমন কিছু অভ্যাস আমার জীবনে যোগ করতে যা আমাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। প্রথমত, সর্দি-কাশি বা ফ্লু থেকে নিজেকে রক্ষা করা। নিয়মিত হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া কানের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক। দ্বিতীয়ত, কানের সঠিক যত্ন নেওয়া। কানের ভেতর কটন বাড বা অন্য কোনো ধারালো জিনিস দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করা উচিত নয়, কারণ এতে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কান পরিষ্কার করার জন্য গরম জলে ভেজানো নরম কাপড় ব্যবহার করাই যথেষ্ট। এছাড়াও, যখন সাঁতার কাটবেন বা স্নান করবেন, তখন কানে জল ঢোকা থেকে বাঁচতে কানের প্লাগ (earplugs) ব্যবহার করতে পারেন।

প্রতিরোধই আসল: সমস্যার গোড়ায় আঘাত

কানের চাপজনিত ব্যথা বারবার ফিরে আসা রোধ করতে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। যারা অ্যালাৰ্জিতে ভোগেন, তারা চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যালাৰ্জির ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালাৰ্জেনগুলো শনাক্ত করা এবং সেগুলোর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা কানের সমস্যা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও, धूमপান পরিহার করা কানের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি, কারণ ধূমপান ইউস্টেশিয়ান টিউবের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করে। শিশুদের ক্ষেত্রে, যদি তারা বারবার কানের সংক্রমণে ভোগে, তবে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে এর দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। কিছু ক্ষেত্রে, কানের সমস্যা এড়াতে বিশেষ ব্যায়াম বা কানের জন্য উপযোগী কিছু টোটকাও কাজ দেয়। এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলোই আপনার কানকে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা দিতে পারে।

কানের চাপের সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকর টিপস

ঝটপট আরাম পেতে কিছু সহজ উপায়

যখন কানে হঠাৎ চাপ অনুভব করেন এবং অসহ্য লাগে, তখন কিছু তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারেন যা দ্রুত আরাম দেবে। এর মধ্যে একটি হলো ‘ভ্যালসালভা ম্যানুভার’ (Valsalva Maneuver)। এটি করার জন্য, নাক চেপে ধরুন এবং মুখ বন্ধ করে আলতো করে শ্বাস ছাড়ার চেষ্টা করুন, যেন কানে বাতাস ঢোকে। এটি মধ্যকর্ণে চাপ বাড়িয়ে ইউস্টেশিয়ান টিউব খুলতে সাহায্য করে। তবে খুব জোরে চাপ দেবেন না, কারণ এটি কানের ক্ষতি করতে পারে। আরেকটি সহজ উপায় হলো, মাথা একদিকে কাত করে কয়েক ফোঁটা উষ্ণ জল বা অলিভ অয়েল কানে দেওয়া। এরপর সেই দিকে কয়েক মিনিট শুয়ে থাকলে কানের ভেতরের চাপ কিছুটা কমে আসে। এই পদ্ধতিগুলো আমি নিজেও জরুরি মুহূর্তে ব্যবহার করেছি এবং দারুণ ফল পেয়েছি।

ঘন ঘন কানের চাপ? জীবনযাত্রায় আনুন পরিবর্তন

যদি আপনার ঘন ঘন কানের চাপজনিত সমস্যা হয়, তবে আপনার জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা খুবই জরুরি, কারণ এটি শ্লেষ্মাকে পাতলা রাখতে সাহায্য করে এবং ইউস্টেশিয়ান টিউবের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখে। চাপ কমানোর জন্য ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পরিহার করুন, কারণ এই পানীয়গুলো শরীরের জলশূন্যতা বাড়ায় এবং কানের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও, নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে ফুসফুসের কার্যকারিতা ভালো থাকে এবং পরোক্ষভাবে ইউস্টেশিয়ান টিউবের স্বাস্থ্যেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমার মনে হয়, সুস্থ জীবনযাপন এবং সঠিক খাদ্যভ্যাসই যেকোনো ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তির অন্যতম সেরা উপায়।

কানের চাপের কারণ প্রতিকারের উপায় কখন চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি
উচ্চতা পরিবর্তন (বিমান, পাহাড়) চুইংগাম চিবানো, হাই তোলা, গিলতে থাকা, ছোট বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো/ফিডার ব্যবহার। ব্যথা তীব্র হলে বা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হলে।
সর্দি, ফ্লু, সাইনাস গরম জলের ভাপ নেওয়া (স্টিম ইনহেলেশন), উষ্ণ সেঁক, ন্যাসাল স্প্রে (ডাক্তারের পরামর্শে)। কানের ভেতর থেকে পুঁজ/রক্ত বের হলে, জ্বর থাকলে, শ্রবণশক্তির পরিবর্তন হলে।
অ্যালাৰ্জি অ্যান্টিহিস্টামিন (ডাক্তারের পরামর্শে), নেটি পট ব্যবহার, অ্যালাৰ্জেন এড়িয়ে চলা। অ্যালাৰ্জিজনিত কানের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা কানের সংক্রমণে পরিণত হলে।
কানের সংক্রমণ শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্যান্য ওষুধ। সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
Advertisement

প্রতিকারের আগে প্রতিরোধ: কানের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিপস

সক্রিয়ভাবে কানের সমস্যা প্রতিরোধ

আমার এতদিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমি একটা বিষয় খুব ভালো করে বুঝেছি যে, যেকোনো সমস্যার প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাটা সবসময়ই ভালো। কানের চাপজনিত ব্যথার ক্ষেত্রেও এটা শতভাগ সত্যি। আমি নিজে দেখেছি, যারা ছোটবেলা থেকে কানের যত্ন নেয়, তাদের এই ধরনের সমস্যা কম হয়। তাই সক্রিয়ভাবে কানের সমস্যা প্রতিরোধ করাটা খুব জরুরি। প্রথমত, ঠান্ডা লাগা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন। ঠান্ডা লাগলে সর্দি-কাশির সাথে কানের সমস্যাও বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, আপনার পরিবেশের প্রতি সচেতন থাকুন। যদি আপনি এমন পরিবেশে কাজ করেন যেখানে খুব বেশি শব্দ হয়, তাহলে কানের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ইয়ারপ্লাগ বা ইয়ার মাফস ব্যবহার করুন। নিয়মিত আপনার কানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন, বিশেষ করে যদি আপনার মনে হয় যে আপনার শ্রবণশক্তিতে কোনো পরিবর্তন আসছে।

জীবনযাত্রায় ছোট ছোট পরিবর্তন, বড় ফলাফল

অনেক সময় আমাদের জীবনযাত্রার ছোট ছোট পরিবর্তনও কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দারুণ ভূমিকা পালন করে। আমি সবসময় সবাইকে বলি, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। জল পান করলে শ্লেষ্মা পাতলা থাকে এবং এটি ইউস্টেশিয়ান টিউবের কার্যকারিতা ভালো রাখে। এছাড়াও, ধূমপান পরিহার করা কানের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ধূমপান কানের ভেতরের টিস্যুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সংক্রমণ বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখে, যা কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন এবং ফলমূল, শাকসবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো শুধুমাত্র আপনার কানের জন্যই নয়, আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও দারুণ উপকারী। বিশ্বাস করুন, এই পরামর্শগুলো মেনে চললে আপনি কানের চাপজনিত সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারবেন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: বিমানে বা উঁচু জায়গায় উঠলে কানে চাপ লাগে কেন, আর এটা আসলে কী?

উ: আরে বাবা, এই অভিজ্ঞতাটা আমাদের প্রায় সবারই আছে, তাই না? আকাশে উড়তে গিয়ে অথবা পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার সময় কানের ভেতরে যে অদ্ভুত একটা চাপ অনুভব করি, সেটাকে আমরা বলি ‘কানের চাপজনিত ব্যথা’ বা Barotrauma। ব্যাপারটা হলো, আমাদের কানের ভেতরে একটা ছোট নালি আছে, যার নাম ইউস্টেশিয়ান টিউব। এটা আমাদের কানের ভেতরের চাপ আর বাইরের বাতাসের চাপকে সমান রাখে। কিন্তু যখন আমরা দ্রুত উচ্চতা পরিবর্তন করি, যেমন বিমান উড়লে বা নামলে, অথবা পাহাড়ে চড়লে, তখন বাইরের বাতাসের চাপ খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এই ইউস্টেশিয়ান টিউব সেই দ্রুত পরিবর্তনের সাথে তাল মেলাতে পারে না। ফলে কানের পর্দার ভেতরে আর বাইরে চাপের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এই ভারসাম্যের অভাবে কানের পর্দা ভেতরের দিকে বা বাইরের দিকে একটু বেঁকে যায়, আর তাতেই আমরা ব্যথা বা চাপের অনুভূতি পাই। আমার নিজের বহুবার এমন হয়েছে যে মনে হয়েছে কান বুঝি ফেটে যাবে!
সর্দি, ফ্লু বা অ্যালার্জির কারণে যদি এই টিউবটা এমনিতেই একটু বন্ধ থাকে, তাহলে কিন্তু সমস্যাটা আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে।

প্র: কানের এই বিরক্তিকর চাপ থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পাওয়ার জন্য কী কী ঘরোয়া উপায় আছে?

উ: যখন কানে চাপ লাগা শুরু হয়, তখন মনে হয় যেন এই মুহূর্তে কোনো একটা কিছু করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, কিছু সহজ কৌশল সত্যিই দারুণ কাজ করে। প্রথমত, সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ঢোক গেলা (swallowing) বা হাই তোলা (yawning)। যখন আমরা ঢোক গেলি বা হাই তুলি, তখন ইউস্টেশিয়ান টিউবটা একটু খোলে আর বাতাসের আদান-প্রদান হয়, ফলে চাপটা কমে। তাই বিমানে ওঠার সময় বা নামার সময় একটু পর পর ঢোক গিলবেন বা হাই তোলার চেষ্টা করবেন। চুইংগাম চিবানোও কিন্তু খুব ভালো একটা পদ্ধতি, কারণ এতে অনবরত ঢোক গেলা হয়। আরেকটা দারুণ কার্যকর পদ্ধতি হলো Valsalva maneuver – মানে, নাকটা চেপে ধরে মুখ বন্ধ করে হালকা করে নিশ্বাস ছাড়ার চেষ্টা করা (খুব জোরে করবেন না যেন, তাতে উল্টো ক্ষতি হতে পারে)। এতে কানের ভেতরে একটা চাপ সৃষ্টি হয় যা টিউবটাকে খুলতে সাহায্য করে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ফিডার বা বোতলে দুধ খাওয়ালে ভালো কাজ দেয়, কারণ তারাও ঢোক গেলে। আমি দেখেছি, গরম সেঁকও বেশ আরামদায়ক হতে পারে। একটা গরম ভেজা কাপড় কানে ধরে রাখলে ভেতরের রক্তনালীগুলো শিথিল হয় এবং চাপ কমতে সাহায্য করে।

প্র: কানের চাপজনিত ব্যথা যদি সহজে না সারে, তাহলে কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন?

উ: বেশিরভাগ সময় কানের এই চাপজনিত ব্যথা নিজে থেকেই সেরে যায় বা ঘরোয়া উপায়ে কমে যায়। কিন্তু সবকিছুরই একটা সীমা আছে, তাই না? আমার অভিজ্ঞতা বলে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। যদি কানের ব্যথা খুব তীব্র হয় এবং কয়েক ঘণ্টা বা এমনকি একদিন পরেও না কমে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে যদি ব্যথা কমার বদলে বাড়তে থাকে, বা এর সাথে কানে কম শোনা (hearing loss), কান থেকে কোনো তরল পদার্থ বের হওয়া, মাথা ঘোরা (dizziness), তীব্র মাথা ব্যথা বা জ্বর আসে, তাহলে এটা আরও গুরুতর কিছুর লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় ইউস্টেশিয়ান টিউবের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় বা কানের ভেতরে সংক্রমণ (ear infection) হলে এমনটা হতে পারে। আমি সবসময় বলি, শরীরের কোনো অস্বাভাবিকতাকেই ছোট করে দেখা উচিত নয়। আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সঠিক সময়ে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া। ডাক্তার আপনার কান পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারবেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারবেন।

📚 তথ্যসূত্র